অল্প মূল্যের খাদ্য তালিকা



















অল্প মূল্যের খাদ্য তালিকা

     ১। সকাল  ৬টায় অঙ্কুরিত ছোলা ও আদা ; বা ভিজানো কাঁচা মুগের ডাল ও আখের গুড় ; বা হাতে গড়া রুটি, ডাল ও তরকারি ; বা পাউরুটি, মাখন ও কলা ছোলা ও মুগের ডালের সাথে কয়েকটা ভিজানো সয়াবিন খাওয়া যেতে পারে । যাদের শরীরের ওজন কম তাদের এ সময় কয়েকটা চিনে বাদাম খাওয়া উচিত । দেহের তাপ ও কর্মশক্তি উৎপাদনে ২০ গ্রাম চিনে বাদাম ১০০ গ্রাম মাছ বা মাংসের সমান । চিনে বাদাম বেশ করে চিবিয়ে অথবা বেটে সরবৎ করে খেলে সহজে হজম হয় । 
     ২। বেলা  ৯টা থেকে  সাড়ে ৯টায় সফেন ভাত, দাল, তরকারী, শাক, মাছ ও টক যাঁরা নিরামিষ আহার করেন তাঁদের বড়ি বা বড়া করে একটু অধিক মাত্রায় ডাল ও সম্ভব হলে শেষ ভাতে দুধ বা দি খাওয়া দরকার । সপ্তাহে  ২/১ দিন ভাতের সাথে তিতো ( উচ্ছে, করলা ইত্যাদি ভাতে বা সুক্তো ) খাওয়া উচিত ।
     ৩। বেলা ১২টায় কিছু মৌসুমী ফল যেমন পেয়ারা, খেজুর, পেঁপে, আম, জাম, বতাবি লেবু , কলা, জামরুল, কমলা লেবু ইত্যাদি থেকে  ২/১ টা খেতে হবে ।
     ৪। বেলা  ২টা থেকে  ৩টায় সফেন ভাত, ডাল, শাক ও তরকারি ;  বা পাঁউরুটি, মাখন ও যে কোনো ফল ; বা চিঁড়ে, দই, দুধ, কলা, নারকেল, গুড় ইত্যাদি । গ্রীষ্মকালে বিকালে যব ও ছোলার ছাতু, অল্প আখের গুড়ের সাথে মেখে খাওয়া যেতে পারে
     ৫। রাত্রি  ৯টা থেকে  ১০টায় লাল আটার রুটি, ডাল, তরকারি ও মাছ । মাঝে মাঝে সামর্থে কুলালে মাছের বদলে ৪/৫ টুকরা মাংস ।
     প্রতিবার খাবার পর কমপক্ষে  ৪/৫ ঘন্টা সময় দিতে হবে , যাতে প্রতিবার খাওয়ার সময় বেশ ক্ষুধার উদ্রেক হয় ।
কেউ ডিম ও দুধ খেতে চাইলে একটি অর্ধসিদ্ধ ডিম সকালে খেলে এবং রাতে এক পোয়া দুধ পান করলে দ্রুত শারীরিক উন্নতি হয় । খাওয়ার পর মুখশুদ্ধি হিসাবে হরিতকি বা আমলকির টুকরা চর্বন করা স্বাস্থ্যকর ।
     খাদ্য তালিকায় দিনের প্রতিবারের খাদ্য ব্যায়ামকারীর আর্থিক অবস্থা ও রুচি ভেদে খাদ্য নির্বাচনের অনেক সুযোগ দেওয়া হয়েছে । আমাদের খাদ্য-তালিকায় স্বল্প মূল্যের পুষ্টিকর খাদ্যের যেমন অভাব নেই, তেমনি মধ্যবিত্ত ও বিত্তশালীর উপযোগী খাদ্যের ব্যবস্থাও প্রদত্ত হয়েছে । এ ছাড়া রোজ যদি একই রকম খাদ্য খাওয়া হয়, তবে খাদ্য যত পুষ্টিকরই হোক তা ভোজনকারীর কাছে তত তৃপ্তীকর হয়না । এর ফলে ভোজন কালে মুখ থেকে পাচক রস নিঃসৃত হয়না । মনে রাখা উচিত ভুক্ত খাদ্য ভালভাবে পরিপাক না হলে  তার সারাংশ আমাদের কোন কাজে লাগে না ।
     এছাড়া প্রত্যেকের উচিত খাদ্য গ্রহণের সাধারণ স্বাস্থ্যকর নিয়মটি মনে রাখাঃ কঠিন ভোজ্য দিয়ে উদরের অর্ধেক পূর্ণ করবে, জলীয় পদার্থে সিকি অংশ পূর্ণ করবে এবং অবশিষ্ট সিকিভাগ সব সময় বায়ু সঞ্চালনের জন্য খালি রাখবে । পুষ্টিকর খাদ্যের অভাব হলে যেমন শরীরের ক্ষতি হয় তেমনি অতি ভোজনেও ক্ষতি হয় ।
     শরীর সুস্থ রাখতে হলে মাঝে মাঝে উপবাস করা প্রয়োজন । যতদিন দেহের বৃদ্ধি হয়, ততদিন অর্থাৎ  ২৪/২৫ বছর পর্যন্ত উপবাসের তেমন প্রয়োজন নেই তবে মাসে ২টা ছুটির দিনে সকাল থেকে বেলে  ১২টা  ১টা পর্যন্ত কিছু না খেয়ে  ১২টা  ১টার পর হাল্কা খাদ্য খেলে শরীর ভাল থাকে ।
     যাঁরা সারাদিন উপবস করতে চান তাঁরা উপবাসের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ২/৩ ঘন্টা অন্তর লেবুর রসসহ জল পান করবেন । অধিক জল পানে অধিক প্রস্রাব হওয়ায় দেহে সঞ্চিত ময়লা ও জীবাণু মুত্রের সাথে অধিক মাত্রায় বেরিয়ে যায়, ফলে দেহ নীরোগ হয় । এ ছাড়া সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাসে পরিপাক যন্ত্র বিশ্রাম পাওয়ায় তার কাজ করার শক্তি বেড়ে যায় । সন্ধ্যার পর সরবৎ, ফল, ছানা ও ভিজে মুগের ডাল খাওয়া দরকার । উপবাসের দিন পরিশ্রম করা উচিত নয় ।

No comments:

Post a Comment